৮ বছরে পা হারিয়েছে ৪৪, নিহত ৫
বিপদ জেনেও মাইন পুতে রাখা জায়গায় যাচ্ছে সীমান্তের লোকজন

ওমর ফারুক হিরু ::
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পয়েন্টে প্রায়ই ঘটছে মাইন বিস্ফোরনের ঘটনা। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনের নিরাপত্তায় টহল জোরদারের পাশাপাশি জনসচেতনতা প্রয়োজন মনে করছে বিজিবি।
এর ধারাবাহিকতায় গত ২১ জুলাই নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে বিজিবি’র আয়োজনে স্থানীয়দের নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভায় ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক বলেন মাইন বিস্ফোরণে হতাহতের বড় কারণ অসর্তকতা। বিপদ জেনেও লোকজন ঝুঁকি নিয়ে জিরো পয়েন্টে যাচ্ছে আর হতাহত হচ্ছে মাইন বিস্ফোরনে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ২০১৭ সাল থেকে গত ৮ বছরে মাইন বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে ৫ জন। পা হারিয়েছে অন্তত ৪৪ জন। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তমব্রু, চাকঢালা, আশাতলী, জামছড়ি, ফুলতলী ও জারুলিয়াছড়ি সীমান্তের লোকজন এ পরিস্থিতিতে পড়েছেন।
বিজিবি’র জনসচেতনতামূলক সভায় আসা মাইন বিস্ফোরণে আহতরা বলছেন, আরকান আর্মি বাংলাদেশের সীমান্তেই মাইন পুতে রাখছে। তাদের জীবন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্তের হাবিবুর রহমানের ছেলে নবি হোসেন বলেন, ১ বছর আগে চরতে যাওয়া গরু আনতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরনে তার ডান পা হারিয়ে ফেলেন। এই মাইনটি ছিল বাংলাদেশ সীমান্তে।

তমব্রুর হেডম্যান পাড়ার অংকেথাইং এর ছেলে অন্যথাইং টংচংগা জানান, ২ বছর আগে আরকান আর্মি পুতা মাইন বিস্ফোরনে বাম পা হারিয়ে ফেলেছেন। যা বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যে’ই ছিল।
তমব্রু’র উত্তর পাড়ার আবুল খায়েরের ছেলে মোঃ হাসান বলেন, ২০১৭ সালে মাইন বিস্ফোরনে আমার দুই পা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমরা যারা সীমান্তে আছি তারা সবসময় নিরাপত্তাহীনতায়। আমরা অনেক সময় বুঝতে পারিনা সীমান্তের কোন অংশ মাইন আছে। এই ক্ষেত্রে বিজিবি’র সহযোগিতা প্রয়োজন।
সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে না যাওয়া পরামর্শ দিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশর সীমান্ত কোথায় শেষ হয়েছে বর্ডার এলাকায় যারা থাকে তারা সবাই জানে। বর্ডার ক্রস করা মানেই বিপদের আশংকা। সুতরাং জেনেশুনে কেন বিপদের দিকে যাব। এ ব্যপারে সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। এ বিষয়ে সচেতনামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক এসএম খায়রুল আলাম বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তায় বিজিবি’র টহল জোরদার রয়েছে। বিজিবি’র পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত সর্তক করার পরেও স্থানীয় কিছু লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যাচ্ছে। এই হতাহতের দায়ভার কে নেবে? সুতরাং সর্তকতার বিকল্প নেই।
পাঠকের মতামত